শাশ্বত বাংলা ও রংপুরের ঐতিহ্য ৩


মুজিবনগর সরকার সনদঃ
     মুজিবনগর, বাংলাদেশ
তারিখ: ১০ এপ্রিল ১৯৭১
যেহেতু ১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বর থেকে ১৯৭১ সালের ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশে অবাধ মাধ্যমে শাসনতন্ত্র রচনার উদ্দেশ্যে প্রতিনিধি নির্বাচিত করা হয়েছিল;
এবং যেহেতু এই নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণ ১৬৯টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ দলীয় ১৬৭ জন প্রতিনিধি নির্বাচিত করেছিল;
এবং যেহেতু জেনারেল ইয়াহিয়া খান ১৯৭১ সনের ৩রা মার্চ তারিখে শাসনতন্ত্র রচনার উদ্দেশ্যে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের অধিবেশন আহ্বান করেন;


এবং যেহেতু তিনি আহূত এই অধিবেশন স্বেচ্ছার এবং বেআইনীভাবে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেন;
এবং যেহেতু পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ তাদের প্রতিশ্রুতি পালন করার পরিবর্তে বাংলাদেশের জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে পারষ্পরিক আলোচনাকালে ন্যায়নীতি বহির্ভূত এবং বিশ্বাসঘাতকতামূলক যুদ্ধ ঘোষণা করেন;
এবং যেহেতু উল্লিখিত বিশ্বাসঘাতকতামূলক কাজের জন্য উদ্ভূত পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমান জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার অর্জনের আইনানুগ অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ ঢাকায় যথাযথভাবে স্বাস্বাধীনতা ঘোষণা করেন, এবং বাংলাদেশের অখণ্ডতা ও মর্যাদা রক্ষার জন্য বাংলাদেশের জনগণের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান;
এবং যেহেতু পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ বর্বর ও নৃশংস যুদ্ধ পরিচালনা করেছে এবং এখনও বাংলাদেশের বেসামরিক ও নিরস্ত্র জনগণের বিরুদ্ধে নজিরবিহীন গণহত্যা ও নির্যাতন চালাচ্ছে;
এবং যেহেতু পাকিস্তান সরকার অন্যায় যুদ্ধ ও গণহত্য এবং নানাবিধ নৃশংস অত্যাচার পরিচালনার দ্বারা বাংলাদেশের গণপ্রতিনিধিদের পক্ষে একত্রিত হয়ে শাসনতন্ত্র প্রণয়ন করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা অসম্ভব কে তুলেছে;
এবং যেহেতু বাংলাদেশের জনগণ তাদের বীরত্ব, সাহসিকতা ও বিপ্লবী কার্যক্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশের উপর তাদের কার্যকরি কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে;

সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী বাংলাদেশের জনগণ নির্বাচিত প্রতিনিধিদের প্রতি যে ম্যান্ডেট দিয়েছেন সে ম্যান্ডেট মোতাবেক আমরা, নির্বাচিত প্রতিনিধিরা, আমাদের সমবায়ে গণপরিষদ গঠন করে পারষ্পরিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণের জন্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশকে একটি সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্র ঘোষণা করছি এবং এর দ্বারা পূর্বাহ্নে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণা অনুমোদন করছি;
এবং এতদ্বারা আমরা আরও সিদ্ধান্ত ঘোষণা করছি যে শাসনতন্ত্র প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপ্রধান এবং সৈয়দ নজরুল ইসলাম উপ-রাষ্ট্রপ্রধান পদে অধিষ্ঠিত থাকবেন;
এবং রাষ্ট্রপ্রধান প্রজাতন্ত্রের সশস্ত্র বাহিনীসমূহের সর্বাধিনায়ক পদে অধিষ্ঠিত থাকবেন; ক্ষমা প্রদর্শনের ক্ষমতাসহ সর্বপ্রকার প্রশাসনিক ও আইন প্রণয়নের ক্ষমতার অধিকারী থাকবেন;
এবং তাঁর কর আরোপ ও অর্থব্যয়ের ক্ষমতা থাকবে;
এবং বাংলাদেশের জনসাধারণের জন্য আইনানুগ ও নিয়মতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য অন্যান্য প্রয়োজনীয় সকল ক্ষমতারও তিনি অধিকারী হবেন।
বাংলাদেশের জনগণ দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসাবে আমরা আরও সিদ্ধান্ত ঘোষণা করছি যে, কোন কারণে যদি রাষ্ট্রপ্রধান না থাকেন অথবা যদি রাষ্ট্রপ্রধান কাজে যোগদান করতে না পারেন অথবা তাঁর দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে যদি অক্ষম হন, তবে রাষ্ট্রপ্রধান প্রদত্ত সকল দায়িত্ব উপ-রাষ্ট্রপ্রধান পালন করবেন। আমরা আরও সিদ্ধান্ত ঘোষণা করছি যে, বিশ্বের একটি জাতি হিসাবে এবং জাতিসংঘের সনদ মোতাবেক আমাদের উপর যে দায়িত্ব ও কর্তব্য বর্তেছে তা যথাযথভাবে আমরা পালন করব। আমরা আরও সিদ্ধান্ত ঘোষণা করছি যে, আমাদের এই স্বাধীনতার ঘোষণা ১৯৭১ সনের ২৬শে মার্চ থেকে কার্যকর বলে গণ্য হবে। আমরা আরও সিদ্ধান্ত ঘোষণা করছি যে, আমাদের এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করার জন্য আমরা অধ্যাপক এম. ইউসুফ আলীকে যথাযথভাবে রাষ্ট্রপ্রধান ও উপ-রাষ্ট্রপ্রধানের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান পরিচালনার জন্য দায়িত্ব অর্পণ ও নিযুক্ত করলাম।

দক্ষিণে সংগ্রাম ও যুদ্ধের ১৮টি ছবি ও পূর্বে গন আন্দোলন এর ১৫টি ছবি রয়েছে।

উত্তরে ১১ টি সেক্টরের মুক্তিযুদ্ধের চিত্র ও দায়িত্বে যারা ছিলেন তাদের নাম।


১৯৭১ সালে সংগঠিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ পরিচলনায় অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে যুদ্ধ পরিচালনার জন্য বাংলাদেশের সমগ্র ভূখণ্ডকে ১১টি যুদ্ধক্ষেত্র বা সেক্টরে ভাগ করা হয়।
   চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে ফেনী নদী পর্যন্ত  মেজর জিয়াউর রহমান (১০ এপ্রিল,১৯৭১-২৫ জুন,১৯৭১), ক্যাপ্টেন রফিকুল ইসলাম (২৮ জুন,১৯৭১-১৪ ফেব্রুয়ারি,১৯৭২)।
   নোয়াখালী জেলা, কুমিল্লা জেলার আখাউড়া-ভৈরব রেললাইন পর্যন্ত এবং ফরিদপুর ও ঢাকার অংশবিশেষ  মেজর খালেদ মোশাররফ (১০ এপ্রিল,১৯৭১-২২ সেপ্টেম্বর,১৯৭১), মেজর এ.টি.এম. হায়দার(২২ সেপ্টেম্বর,১৯৭১-১৪ ফেব্রুয়ারি,১৯৭২)
   সিলেট জেলার হবিগঞ্জ মহকুমা, কিশোরগঞ্জ মহকুমা, আখাউড়া-ভৈরব রেললাইন থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে কুমিল্লা ও ঢাকা জেলার অংশবিশেষ   মেজর কে এম শফিউল্লাহ (১০ এপ্রিল,১৯৭১-২১ জুলাই,১৯৭১), মেজর এ.এন.এম. নূরুজ্জামান (২৩ জুলাই,১৯৭১-১৪ ফেব্রুয়ারি,১৯৭২)
সিলেট জেলার হবিগঞ্জ মহকুমা, কিশোরগঞ্জ মহকুমা, আখাউড়া-ভৈরব রেললাইন থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে কুমিল্লা ও ঢাকা জেলার অংশবিশেষ    মেজর কে এম শফিউল্লাহ (১০ এপ্রিল,১৯৭১-২১ জুলাই,১৯৭১), মেজর এ.এন.এম. নূরুজ্জামান (২৩ জুলাই,১৯৭১-১৪ ফেব্রুয়ারি,১৯৭২) 
   সিলেট জেলার পূর্বাঞ্চল এবং খোয়াই-শায়েস্তাগঞ্জ রেললাইন বাদে পূর্ব ও উত্তর দিকে সিলেট-ডাউকি সড়ক পর্যন্ত মেজর চিত্ত রঞ্জন দত্ত (১০ এপ্রিল,১৯৭১-১৪ ফেব্রুয়ারি,১৯৭২)
   সিলেট-ডাউকি সড়ক থেকে সিলেট জেলার সমগ্র উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চল   মেজর মীর শওকত আলী (১০ এপ্রিল,১৯৭১-১৪ ফেব্রুয়ারি,১৯৭২)
   সমগ্র রংপুর জেলা এবং দিনাজপুর জেলার ঠাকুরগাঁও মহকুমা  মোহাম্মদ খাদেমুল বাশার (১০ এপ্রিল,১৯৭১-১৪ ফেব্রুয়ারি,১৯৭২)
   দিনাজপুর জেলার দক্ষিণাঞ্চল, বগুড়া, রাজশাহী এবং পাবনা জেলা  মেজর নাজমুল হক(১০ এপ্রিল,১৯৭১-২৭ সেপ্টেম্বর,১৯৭১,দুর্ঘটনায় নিহত), মেজর কাজী নূরুজ্জামান(২৮ সেপ্টেম্বর,১৯৭১-১৪ ফেব্রুয়ারি,১৯৭২)
   সমগ্র কুষ্টিয়া ও যশোর জেলা, ফরিদপুরের অধিকাংশ এলাকা এবং দৌলতপুর-সাতক্ষীরা সড়কের উত্তরাংশ  মেজর আবু ওসমান চৌধুরী (১০ এপ্রিল,১৯৭১- ১৭ জুলাই,১৯৭১), মেজর এম. এ. মঞ্জুর (১৪ আগস্ট,১৯৭১-১৪ ফেব্রুয়ারি,১৯৭২)
   দৌলতপুর-সাতক্ষীরা সড়ক থেকে খুলনার দক্ষিণাঞ্চল এবং সমগ্র বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলা মেজর এম এ জলিল (১০ এপ্রিল,১৯৭১-২৪ ডিসেম্বর,১৯৭১), মেজর জয়নুল আবেদীন(২৪ ডিসেম্বর,১৯৭১-১৪ ফেব্রুয়ারি,১৯৭২)
১০  কোনো আঞ্চলিক সীমানা নেই। নৌবাহিনীর কমান্ডো দ্বারা গঠিত। শত্রুপক্ষের নৌযান ধ্বংসের জন্য বিভিন্ন সেক্টরে পাঠান হত --
১১  কিশোরগঞ্জ মহকুমা বাদে সমগ্র ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইল জেলা এবং নগরবাড়ি-আরিচা থকে ফুলছড়ি-বাহাদুরাবাদ পর্যন্ত যমুনা নদী ও তীর অঞ্চল   মেজর জিয়াউর রহমান (২৬ জুন,১৯৭১-১০ অক্টোবর,১৯৭১), মেজর আবু তাহের (১০ অক্টোবর,১৯৭১-২ নভেম্বর,১৯৭১), ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট এম হামিদুল্লাহ খান (২ নভেম্বর,১৯৭১-১৪ ফেব্রুয়ারি,১৯৭২)

আরও পূর্বে ভিতরে গিয়ে অন্য একটি রুমে-

উত্তরে রংপুরের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক ২৪টি ছবি।


প্রথম ছবি- শহীদ মোবারক হোসেন, পিতা- মৃত আব্দুল কাদের, শালবন রংপুর। তিনি ২৬ ই আগস্ট ১৯৭১ নীলফামারী জেলায় চিলাহাটীতে পাক বাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে নিহত হন।




তৃতীয় ছবি- রংপুরের কৃতি সন্তান কুষ্টিয়ায় প্রথম শহীদ রনী রহমান। জন্মস্থান- শহীদ রনী রহমান সড়ক, পাক পাড়া, রংপুর।



উত্তরে উপরে সাতজন বীরশ্রেষ্ঠের জীবনী চিত্র সহ দেয়া আছেপূর্বে নির্যাতন ও ধ্বংস বিষয়ক ১৮টি ছবি।
পশ্চিমে বিজয় সম্পর্কিত ১৫টি ছবি।

দক্ষিণে গনহত্যা বিষয়ক ১৮টি ছবি।


ভবনের দ্বিতীয় তলার দুটি রুমে সাজানো আছে মুক্তিযুদ্ধে ব্যবহৃত কিছু অস্ত্র ও যন্ত্র। তার মধ্যে রয়েছে-
১। এমজি ১ও৩
২। ৩০৩ ব্রেন এলএমজি মার্ক-৩। এটির সাহায্যে শত্রু মুক্ত হয় রংপুর।
৩। এসএলআরএল ১ও ১/১এ ১। এটি মুক্তিযোদ্ধাদের নির্ভরযোগ্য হাতিয়ার, হালকা ও কার্যকরী।
৪। ৩০" ব্রেনিং এমজি (ইউএসএ)।
৫। সেমি অটো রাইফেল টাইপ-১৯৫৬ (চায়না)।
৬। ৭.৬২ এইচএমজি টাইপ-১৯৫৬ (চায়না)।


সাইক্লোস্টাইল মেশিনঃ
এটির মাধ্যমে ১৯৭১ সালে দৈনিক অগ্রদূত পত্রিকা ছাপা হত।
সংগ্রহঃ- রৌমারী সিজি জামান উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষাগার হতে।
সংগ্রহকারীঃ- প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক ও দৈনিক অগ্রদূত পত্রিকার সম্পাদক আজিজুল হক, রৌমারী কুড়িগ্রাম

সেলাইমেশিনঃ
১৯৭১ সালে এই সেলাই মেশিন দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে নারী সংগঠক রেজিয়া বেগম স্বাধীন বাংলার পতাকা সেলাই করতেন।
সংগ্রহঃ- রৌমারী সিজি জামান উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষাগার হতে।
সংগ্রহকারীঃ- এ্যাডভোকেট আব্রাহাম লিংকন ও বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা হারুন অর রশীদ, কুড়িগ্রাম।

বোমা তৈরীর কেমিকেল মাপার যন্ত্রঃ
১৯৭১ সালে এই যন্ত্র দিয়ে বোমা তৈরীর কেমিকেল মাপা হত।
সংগ্রহঃ- রৌমারী সিজি জামান উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষাগার হতে।
সংগ্রহকারীঃ- এ্যাডভোকেট আব্রাহাম লিংকন ও বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা হারুন অর রশীদ, কুড়িগ্রাম

এছাড়াও অন্য আর একটি রুমে রয়েছে,
১। ৭৫ মি.মি. আর আর টাইপ-১৯৫৬ (চায়না)। এটি মুক্তিযুদ্ধে ব্যবহৃত অস্ত্র।
২। ৭৩ মি.মি. আর এল এটি উইথ শিল্ড এফ/আর হিলি যুদ্ধে ব্যবহৃত অস্ত্র।
৩। ওএমএল ৩" মর্টার মার্ক-৪ (ইউ কে)। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যবহৃ অস্ত্র।
৪। ওএমএল ২" মর্টার মার্ক-৮/১ (ইউ কে)। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যবহৃ অস্ত্র।
৫। ০.৩৮ পিস্তল রিভলভার ডাব্লিউ এন্ড মার্ক-৩ (ইউ কে)। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অফিসারদের ব্যবহারিত পিস্তল যা ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ এর পর জমা নেয়া হয়।
৬। ৭.৬২ মি.মি. পিস্তল টাইপ-৫৪ (চায়না)।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অফিসারদের ব্যবহারিত পিস্তল যা ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ এর পর জমা নেয়া হয়।
৭। ২৬ মি.মি. সিগন্যাল পিস্তল টাইপ-১৯৫৭ (চায়না)।
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যবহারিত সিগন্যাল পিস্তল; যা দিয়ে বিজয় বার্তা পৌঁছে দেয়া হত সবার কাছে।
৮। ১" সিগন্যাল পিস্তল নম্বর-১, মার্ক-৫। যা দিয়ে বিজয় বার্তা পৌঁছে দেয়া হত সবার কাছে।
৯। ৭.৬২ মি.মি. এসএমজি টাইপ-১৯৫৬ (চায়না)। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যবহৃত অস্ত্র। এই স্বয়ংক্রিয় এসএমজি দিয়ে মুক্ত হয় রংপুর অঞ্চল।

এছাড়াও নিচ তলার পশ্চিম দিকের একটি রুমে রয়েছে গ্রন্থাগার। যেখানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক অনেক বই সংগৃহীত আছে।


মূল্যায়নঃ শাশ্বত বাংলার মাধ্যমে আমরা প্রাচীন বাংলা সহ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও বৃহত্তর রংপুরের মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন তথ্য চিত্র ও ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারি। শাশ্বত বাংলায় সমস্থ তথ্য আলোচিত না হলেও যেসব বিষয় এখানে স্থান পেয়েছে তার মাধ্যমে আমরা অতীত ইতিহাস থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত অনেক ধারনা পেয়ে থাকি। তাই এর গুরুত্ব বিবেচনা করে একে শাশ্বত বাংলা বললে হয়তোবা ভূল হবে না।

শিক্ষনীয় বিষয়ঃ আমরা এই শাশ্বত বাংলার মাধ্যমে অতীতে ছাত্রদের সম্মিলিত আন্দোলন ও বাঙ্গালী জাতিকে যে দমিয়ে রাখা সম্ভব না সে সম্পর্কে জানতে পারি।

উপংহারঃ উপরিউক্ত আলোচনার পরিপেক্ষিতে একথা বলা যায় যে, ইতিহাস হলো কোন জাতি বা মানব গোষ্টির অতীতের দর্পণ। দর্পনের সামনে দাড়ালে মানুষ যেমন নিজেকে অবলোকন করতে পারে, তেমনি ইতিহাসের সামনে দাড়ালে কোন জাতি বা মানব গোষ্টি তার অতীত ঐতিহ্য অনুধাবন করতে পারে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অতীত ইতিহাস জানতে হলে শাশ্বত বাংলা একটি অন্যতম মাধ্যম। যার মাধ্যমে আমরা প্রাচীন বাংলার ইতিহাস হতে শুরু করে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, চুয়ান্নর যুক্তফ্রন্টের নির্বাচন, ছেষষ্টির ছয় দফা দাবি, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, সত্তরের নির্বাচন এবং সর্বোপরি ১৯৭১ সালের মুক্তিযদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিজয় অর্জন সম্পর্কে জানতে পারি। শাশ্বত বাংলা বলতে যেহেতু আবহমান বাংলা বা চিরন্তন বাংলাকে বুঝায় তাই বাংলার আবহমান চিত্র বা অতীত ইতিহাস সংরক্ষণের শাশ্বত বাংলার একান্ত প্রয়োজন।




সহায়ক তথ্যসমূহঃ
I.       লেঃ কর্নেল (অবঃ) আবু ওসমান চৌধুরী, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম,(স্বাধীনতার ইতিহাস)প্রকাশকঃ (সেবা পাবলিশার্স, মহাখালী জেল গেইট ঢাকা)
II.     সিদ্দিক মালিক, নিয়াজীর আত্মসমর্পণের দলিল। প্রকাশকঃ (নভেল পাবলিকেশন্স, ১৩৭, শান্তিনগর ঢাকা)
III.   . মোহাম্মদ হান্নান, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস। প্রকাশকঃ (মোহাম্মদ লিয়াকত উল্লাহ, বাংলাবাজার ঢাকা-১১০০)
IV.      মুনতাসীর মামুন, একাত্তরের বিজয়গাঁথা। প্রকাশকঃ (ওসমান গনি, ৩৬, বাংলাবাজার ঢাকা-১১০০)
V.       সাহিদা বেগম, যুদ্ধে যুদ্ধে নয় মাস। প্রকাশকঃ (মফিজুল হক, ৫১ পুরানা পল্টন, ঢাকা-১১০০)
VI.      বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিল পত্র, পঞ্চম খন্ড। প্রকাশকঃ (গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের পক্ষে হাফিজুর রহমান, ৮১/বি, সেগুনবাগিচা, ঢাকা-)
VII.   মেজর রফিকুল ইসলাম পি এস সি, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, ঐতিহাসিক ভাষন ইসতেহার ও চিঠি (প্রকাশকাল, ফাল্গুন ১৪০৩/মার্চ ১৯৯৭)
VIII. সুকুমার বিশ্বাস, বাংলাদেশঃ মুক্তিযুদ্ধের ভূগোল ইতিহাস। প্রকাশকঃ (ওসমান গনি, আগামী প্রকাশনী, ৩৬ বাংলাবাজার ঢাকা-১১০০)
IX.      এম. আর. আখতার মুকুল, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকা। প্রকাশকঃ (ওসমান গনি, ৩৬ বাংলাবাজার, ঢাকা-১১০০)
X.       মহসীন উদ্দিন আহমেদ, যুদ্ধের স্মৃতি। প্রকাশকঃ (আগামী প্রকাশনী ৩৬ বাংলাবাজার, ঢাকা-১১০০)
XI.      দৈনিক সংবাদ। ২১ জানুয়ারী ১৯৬৯।


No comments

Thanks for your Comment

Powered by Blogger.